Info Educations Present Class 10 History MCQ Online Test
প্রিয় ছাত্রছাত্রী ,তোমাদের সবাইকে স্বাগত Info Educations Present মাধ্যমিক ইতিহাস MCQ মক টেস্ট Part 02 এ। আশা করি তোমরা সবাই খুব ভালো আছো। Info Educations নিয়ে এসেছে WBBSE Madhyamik All Subjects MCQ Mock Test Programme। যেখানে তোমাদের জন্য থাকছে ইতিহাস,ভূগোল, বাংলা,ইংরেজি , জীবন বিজ্ঞান, ভৌত বিজ্ঞান এবং অনেক বিষয়ের MCQ মক টেস্ট (MCQ Mock Test)।
Madhyamik Etihas MCQ Mok Test। History Mock Test in Bengali with Answers Part-01
আজ তোমাদের জন্য থাকছে ইতিহাস মক টেস্ট (Madhyamik Online Mock Test And MCQ Suggestion)। ইতিহাস মক টেস্ট ক্লাস টেন (Class 10) ছাত্রছাত্রীদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তোমাদের মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নপত্র (Madhyamik History Question Paper) প্যাটার্ন কে Follow করে বানানো হয়েছে। তোমরা ভালো করে মাধ্যমিক ইতিহাস মক টেস্ট (Madhyamik History MCQ Online Mock Test) টি দাও।
মাধ্যমিক ইতিহাসের Mock Test পার্ট 02। ইতিহাস MCQ Quiz in বাংলা
বিষয় - ইতিহাস
শ্রেণী - দশম
প্রশ্ন সংখ্যা - 30
সময় - প্রত্যেক প্রশ্নের জন্য 60 Seconds
ইতিহাস MCQ class 10 । দশম শ্রেণির ইতিহাস
পরীক্ষাটি দেওয়ার জন্য নিচে দেওয়া Start Exam button এ ক্লিক করো।
History MCQ Mock Test
60
1
ভারতে নিম্নবর্গীয় ইতিহাসচর্চার সূচনা করেছিলেন-
(ক) রণবীর চক্রবর্তী
(খ) বিপান চন্দ্র
(গ) রণজিৎ গুহ
(ঘ) ইরফান হাবিব
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পাদনা করেছিলেন—
(ক) বঙ্গদর্শন পত্রিকা
(খ) বামাবোধিনী পত্রিকা
(গ) দেশ পত্রিকা
(ঘ) সোমপ্রকাশ পত্রিকা
'হিন্দু প্যাট্রিয়ট' পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন -
(ক) হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
(খ) মধুসূদন রায়
(গ) গিরীশচন্দ্র ঘোষ
(ঘ) দীনবন্ধু মিত্র
প্রাচ্যশিক্ষার সমর্থক একজন শিক্ষাবিদ হলেন-
(ক) আলেকজান্ডার ডাফ
(খ) রামমোহন রায়
(গ) ডেভিড হেয়ার
(ঘ) কোলব্রুক
'ব্রহ্মানন্দ' নামে পরিচিত ছিলেন -
(ক) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(খ) কেশবচন্দ্র সেন
(গ) শিবনাথ শাস্ত্রী
(ঘ) রাধাকান্ত দেব
ভারতীয় বনবিভাগের সূচনা হয়েছিল—
(ক) ১৮৬২ খ্রি.
(খ) ১৮৬৩ খ্রি.
(গ) ১৮৬৪ খ্রি.
(ঘ) ১৮৬৫ খ্রি.
'খুঁৎকাঠি প্রথা' প্রচলিত ছিল—
(ক) কোলদের মধ্যে
(খ) ভীলদের মধ্যে
(গ) সাঁওতালদের মধ্যে
(ঘ) মুন্ডাদের মধ্যে
মহাবিদ্রোহের সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন—
(ক) লর্ড ক্যানিং
(খ) লর্ড ডালহৌসি
(গ) লর্ড বেন্টিঙ্ক
(ঘ) লর্ড লিটন
‘বর্তমান ভারত' প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল—
(ক) সঞ্জীবনী পত্রিকায়
(খ) বঙ্গদর্শন পত্রিকায়
(গ) উদ্বোধন পত্রিকায়
(ঘ) প্রবাসী পত্রিকায়
‘ভারতমাতা' চিত্রে ভারতমাতার হাতের সংখ্যা—
(ক) ২টি
(খ) ৩টি
(গ) ৫টি
(ঘ) ৪টি
ভারতের হাফটোন ব্লক প্রিন্টিং-এর উদ্ভাবক ছিলেন—
(ক) উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী
(খ) জেমস হিকি
(গ) ওয়ারেন হেস্টিংস
(ঘ) সুকুমার রায়
জাতীয় শিক্ষা পরিষদের প্রথম সভাপতি ছিলেন—
(ক) অরবিন্দ ঘোষ
(খ) রাসবিহারী ঘোষ
(গ) হীরেন্দ্রনাথ দত্ত
(ঘ) তারকনাথ পালিত
রম্পা বিদ্রোহ হয়েছিল—
(ক) কেরলে
(খ) পাঞ্জাবে
(গ) অন্ধ্রপ্রদেশে
(ঘ) মহারাষ্ট্রে
ভারতে প্রথম মে দিবস পালিত হয়েছিল—
(ক) মাদ্রাজে
(খ) দিল্লিতে
(গ) কলকাতায়
(ঘ) লাহোরে
নীচের নামগুলির মধ্যে বেমানান হল—
(ক) মানবেন্দ্রনাথ রায়
(খ) অবনী মুখার্জী
(গ) সি মার্টিন
(ঘ) নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য
প্রথম বয়কট আন্দোলনের ডাক দেন—
(ক) সুভাষচন্দ্র বসু
(খ) চিত্তরঞ্জন দাশ
(গ) সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
(ঘ) কৃষ্ণকুমার মিত্র
কল্পনা দত্তকে 'অগ্নিকন্যা' নামে অভিহিত করেছিলেন—
(ক) সূর্য সেন
(খ) গণেশ ঘোষ
(গ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(ঘ) লীলা নাগ (রায়)
‘সত্যশোধক সমাজ' গঠন করেছিলেন—
(ক) জ্যোতিবা ফুলে
(খ) মহাত্মা গান্ধি
(গ) আম্বেদকর
(ঘ) রামস্বামী নাইকার
‘নেহরু-লিয়াকত চুক্তি'র অপর নাম—
(ক) বোম্বে চুক্তি
(খ) দিল্লি চুক্তি
(গ) লাহোর চুক্তি
(ঘ) মাদ্রাজ চুক্তি
‘A Train to Pakistan' গ্রন্থের রচয়িতা হলেন—
(ক) ভি. পি. মেনন
(খ) অমৃতা প্রীতম
(গ) খুশবন্ত সিং
(ঘ) আবুল কালাম আজাদ
সম্প্রকাশ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন—
(ক) দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ
(খ) অমৃতা প্রীতম
(গ) খুশবন্ত সিং
(ঘ) আবুল কালাম আজাদ
সত্য / মিথ্যা নির্বাচন করো -
"লেখাগারে সরকারি নথি সংরক্ষিত করা হয়।"
"লেখাগারে সরকারি নথি সংরক্ষিত করা হয়।"
A) সত্য
B) মিথ্যা
সত্য / মিথ্যা নির্বাচন করো -
‘যত মত তত পথ' বিবেকানন্দের বিখ্যাত উক্তি।
‘যত মত তত পথ' বিবেকানন্দের বিখ্যাত উক্তি।
A) সত্য
B) মিথ্যা
সত্য / মিথ্যা নির্বাচন করো -
হিন্দু মেলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে।
হিন্দু মেলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে।
A) সত্য
B) মিথ্যা
সত্য / মিথ্যা নির্বাচন করো -
বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ভারতের প্রথম রাজনৈতিক সমিতি।
বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ভারতের প্রথম রাজনৈতিক সমিতি।
A) সত্য
B) মিথ্যা
'ক' স্তম্ভের সঙ্গে 'খ' স্তম্ভ মেলাও:
Options | Matches |
---|---|
a) চার্লস উইলকিনস | 1. হেমচন্দ্ৰ ঘোষ |
b) একা আন্দোলন | 2. আজাদ হিন্দ ফৌজ |
c) ঝাঁসির রানি বাহিনী | 3. বাংলার গুটেনবার্গ |
d) বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স | 4. মাদারি পাসি |
A) a - 4 , b - 3 , c - 1 , d - 2
B) a - 3 , b - 4 , c - 2 , d - 1
C) a - 2 , b - 4 , c - 3 , d - 1
D) a - 1 , b - 2 , c - 4 , d - 3
সঠিক বিবৃতি বেছে নাও -
বিবৃতি: উডের ডেসপ্যাচ ছিল ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি মহাসনদ।
বিবৃতি: উডের ডেসপ্যাচ ছিল ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি মহাসনদ।
A) ব্যাখ্যা ১. উডের ডেসপ্যাচের মাধ্যমে ভারতে শিক্ষার সূচনা হয়েছিল।
B) ব্যাখ্যা ২. এর মাধ্যমে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার সূচনা হয়েছিল।
C) ব্যাখ্যা ৩. এর মাধ্যমে ভারতে শিক্ষাপ্রসারের একটি সুস্পষ্ট নীতি প্রবর্তিত হয়েছিল।
D) কোনোটিই নয়
সঠিক বিবৃতি বেছে নাও -
বিবৃতিঃ দুদু মিয়ার মৃত্যুর পর ফরাজি আন্দোলন দুর্বল হয়ে গিয়েছিল।
বিবৃতিঃ দুদু মিয়ার মৃত্যুর পর ফরাজি আন্দোলন দুর্বল হয়ে গিয়েছিল।
A) ব্যাখ্যা ১. এই আন্দোলন নেতৃত্বহীন হয়ে পড়েছিল।
B) ব্যাখ্যা ২.- নোয়া মিয়া এই আন্দোলনকে ধর্মীয় লক্ষ্যে গড়ে তোলেন।
C) ব্যাখ্যা ৩. ব্রিটিশরা তীব্র দমননীতি গ্রহণ করেছিল।
D) কোনোটিই নয়
সঠিক বিবৃতি বেছে নাও -
বিবৃতি: আইন অমান্য আন্দোলনে কৃষকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছিল।
বিবৃতি: আইন অমান্য আন্দোলনে কৃষকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছিল।
A) ব্যাখ্যা ১. পৃষকদের স্বার্থরক্ষার বিষয়টি এই আন্দোলনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
B) ব্যাখ্যা ২. কৃষকেরা এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল।
C) ব্যাখ্যা ৩. কৃষকদের খাজনা মকুবের বিষয়টিকে এই আন্দোলনে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।
D) কোনোটিই নয়
সঠিক বিবৃতি বেছে নাও -
বিবৃতি: শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে বামপন্থী মতবাদ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।
বিবৃতি: শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে বামপন্থী মতবাদ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।
A) ব্যাখ্যা ১. শোষিত ও অত্যাচারিত শ্রমিক শ্রেণির মুক্তির লক্ষ্যে বামপন্থীরা সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিল।
B) ব্যাখ্যা ২. শ্রমিক শ্রেণি বামপন্থী নেতাদের পছন্দ করত।
C) ব্যাখ্যা ৩. শ্রমিক শ্রেণির জন্য জাতীয় কংগ্রেস কোনো আন্দোলন করেনি।
D) কোনোটিই নয়
হরপ্পা সভ্যতার(Horoppa Sovyota) বৈশিষ্ট্য ও পতনের কারণ। হরপ্পা সভ্যতা (Horoppa Civilization)
উত্তর : -
হরপ্পা সভ্যতার ভূমিকা: আজ থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার বছর পূর্বে ভারতীয় উপমহাদেশে সিন্ধু অববাহিকা অঞ্চল জুড়ে এক সুপ্রাচীন সভ্যতার উদয় ঘটে, ইতিহাসে যা হরপ্পা বা সিন্ধু সভ্যতা নামে পরিচিত। মৌলিকত্বে, অভিনবত্বে ও উৎকর্ষে এই সভ্যতা বিশ্বের যে-কোনো প্রাচীন সভ্যতার সঙ্গে তুলনীয়। সুপ্রাচীন চৈনিক, মিশরীয় ও সুমেরীয় সভ্যতার সমসাময়িক ছিল হরপ্পা বা সিন্ধু সভ্যতা।
হরপ্পা সভ্যতা
1. হরপ্পা সভ্যতা আবিষ্কার : প্রত্নতত্ত্ববিভাগের তৎকালীন অধিকর্তা স্যার জন মার্শালের তত্ত্বাবধানে দয়ারাম সাহানি পাঞ্জাবের মন্টগোমারি জেলায় ইরাবতী (রাভী) নদীর তীরে এক উন্নত নগর সভ্যতা আবিষ্কার করেন (১৯২১ খ্রি.)। পরে রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় সিন্ধুনদের পশ্চিম তীরে সিন্ধুপ্রদেশের লারকানা জেলায় মহেন-জো-দারো নামক স্থানে এক উন্নত নগর সভ্যতার সন্ধান পান (১৯২২ খ্রি.)।
2. হরপ্পা সভ্যতার সময়কাল: লিখিত তথ্যের অভাবের জন্য সিন্ধু বা হরপ্পা সভ্যতার যথাযথ কালনির্ণয় আজও সম্ভব হয়নি। তবে বিভিন্ন দেশের| প্রত্নতত্ত্ববিদ ও নৃতত্ত্ববিদগণ খননকার্য থেকে প্রাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের দিক ভিত্তিতে এই সভ্যতার উত্থান ও পতনের কালনির্ণয়ের চেষ্টা করেছেন।
(1) স্যার জন মার্শালের মতে হরপ্পা সভ্যতার কালসীমা হল চিহ্ন ৩২৫০-২৭৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।
(2) সি. জে. গ্যাডের মতে হরপ্পা সংস্কৃতির বিকাশকাল ছিল ২৩৫০-১৭৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।
(3) স্টুয়ার্ট করা পিগট ও মর্টিমার হুইলারের মতে হরপ্পা সংস্কৃতির কালসীমা ২৫০০- ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।
(4) ডব্লিউ. এ. ফেয়ারসার্ভিস রেডিয়ো কার্বন- সিন্ধু পদ্ধতি অনুসরণে সিন্দু সংস্কৃতির কালসীমা ধার্য করেছেন ২০০০- ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।
(5) অলচিন দম্পতির মতে, “হরপ্পা সভ্যতার কালসীমা ছিল ২১০০-১৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।"
3. ব্যাপ্তি: শুধুমাত্র সিন্ধু উপত্যকা জুড়ে নয়, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান, গুজরাত, রাজপুতানা, সৌরাষ্ট্র এবং নর্মদা উপত্যকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে হরপ্পা সভ্যতার বিস্তার ঘটে। পশ্চিমে মাকরান উপকূলের সুতকাজেনদোর থেকে পূর্বে দিল্লির কাছাকাছি আলমগীরপুর এবং উত্তরে জম্মুর নিকটবর্তী মান্ডা থেকে দক্ষিণে গোদাবরী উপত্যকার দাইমাবাদ পর্যন্ত বিশাল অঞ্চলজুড়ে (আধুনিক মত অনুসারে ১২ লক্ষ ৫০ হাজার বর্গকিমি) হরপ্পা সভ্যতার ব্যাপ্তি।
4. হরপ্পা সভ্যতার নগর পরিকল্পনা: সিন্ধু বা হরপ্পা সভ্যতা ছিল মূলত একটি নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা।
(1) রাস্তাঘাট: নগরের রাস্তাঘাটগুলি ছিল উত্তর থেকে দক্ষিণে এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে সোজা বিস্তৃত। পোড়া ইঁট দিয়ে বাঁধানো রাস্তাগুলি ছিল ৯ ফুট থেকে ৩৪ ফুট পর্যন্ত চওড়া। রাস্তার দুদিকে বাঁধানো ফুটপাতে ছিল ল্যাম্পপোস্ট ও ডাস্টবিন।
(2) বাসগৃহ : মূল রাস্তার দুদিকে, পোড়া ইটের তৈরি একতল, তিল, তিল বসতবাড়ির অস্তিত্ব ছিল। বাড়িগুলির দরজা, জানালা রাস্তার দিকে না হয়ে, বাড়ির ভিতরের উঠোনের দিকে লাগানো হত।
(3) পয়ঃপ্রণালী: নগর সভ্যতার অঙ্গ হিসেবে পরে দু-দিকে ছিল ১-২ ফুট গভীর নর্দমা। প্রতিটি বাড়ির শৌচাগারের জন্ম এইসব নর্দমা দিয়ে বাইরে পাঠানো হত।
(4) গৌরব্যবস্থা: হরপ্পায় এক কেন্দ্রীভূত গৌরব্যবস্থার অস্তিত্ব ছিল বলে অনুমান করা হয়। নগরবাসীরা পৌরশাসনের নিয়ম মেনে বাড়িঘর তৈরি করত।
5. সামাজিক জীবন:
(1) শ্রেণিবিন্যাস: হরপ্পার সমাজে চারটি সম্প্রদায় বসবাস করত, যথা— শিক্ষিত, যোদ্ধা, ব্যবসায়ী, শ্রমিক। শিক্ষিতদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন— চিকিৎসক, পুরোহিত, জ্যোতিবী, জাদুকর প্রমুখ। সৈনিকরা ছিলেন যোদ্ধা শ্রেণিভুত্ব। স্বর্ণকার, মণিকার, ভাস্কর, মৃৎশিল্পী প্রমুখ ব্যবসায়ী শ্রেণিভুত্ব ও কৃষক, চর্মকার, জেলে প্রমুখ ছিল শ্রমিক শ্রেণিভুক্ত।
(২) খাদ্য: হরপ্পাবাসীদের প্রধান খাদ্য ছিল গম, যব, তরিতরকারি, দুধ, খেজুর, কড়াইশুঁটি, মাছ, ডিম, মাংস প্রভৃতি।
(3) পোশাক: হরপ্পায় নারী ও পুরুষ উভয়েই সুতি ও পশম দু-ধরনের পোশাকই পরত। দেহের উপরের অংশের এবং নীচের অংশের জন্য তারা আলাদা আলাদা পোশাক পরত।
(4) অবসর বিনোদন : হরপ্পাবাসীদের অবসর বিনোদনের মাধ্যম ছিল নাচ-গান, পশু ও পাখি শিকার, রথদৌড়, পাশাখেলা ইত্যাদি ।
6. অর্থনৈতিক জীবন:
(1) কৃষি : হরপ্পাবাসীদের অধিকাংশই ছিলেন কৃষিজীবী। তাদের উল্লেখযোগ্য কৃষিজ ফসল ছিল ধান, গম, যব, রাই, তিল, তুলা, সরিষা ইত্যাদি।
(২) পশুপালন: হরপ্পাবাসীদের মধ্যে অনেকে পশুপালনকে অবলম্বন করেও জীবিকা নির্বাহ করত। তাদের গৃহপালিত পশুদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল। কুঁজওয়ালা ষাড়, বলদ, মহিষ, ভেড়া, শূকর, ছাগল, গাধা, উট, কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি।
(3) শিল্প: সিন্ধু উপত্যকা অঞ্চলে ধাতুশিল্প ও মৃৎশিল্পের প্রচলন ছিল। 'Art for Arts sake'—এই নীতিতে সিন্ধুবাসীরা বিশ্বাসী ছিল না। কুটিরশিল্পেও তারা যথেষ্ট পারদর্শী ছিল।
(4) হরপ্পা সভ্যতার ব্যাবসা বাণিজ্য : সিন্ধুবাসীরা স্থলপথ ও জলপথ ধরে দেশের মধ্যে ও দেশের বাইরে ব্যাবসাবাণিজ্যে লিপ্ত ছিল। আমদানি দ্রব্যের মধ্যে অন্যতম ছিল সোনা, রুপো, সিসা, টিন, দামি পাথর, দেবদারু কাঠ ইত্যাদি। রপ্তানি দ্রব্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল তুলো, সুতিবস্ত্র, তামা, হাতির দাঁতের তৈরি বিভিন্ন জিনিস।
7. ধর্মীয় জীবন: সিন্ধুবাসীরা মাতৃদেবী, পশুপতি শিব ও পৃথিবীর আরাধনা করার পাশাপাশি জল, পাথর, বৃক্ষ, আগুন, জীবজন্তু, লিঙ্গ ও যোনি পূজা করত। এখানকার প্রাপ্ত একটি শিলে মাথায় শিংযুক্ত তিনমুখ বিশিষ্ট একটি ধ্যানরত যোগীমূর্তি দেখা যায় । সিন্ধুবাসীরা অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মাদুলি পরত। তারা মৃতদেহকে তিনভাবে সমাধিস্থ করত।
৪. পতন: সিন্ধুসভ্যতার পতন কীভাবে ঘটেছিল এ নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। (1) প্রাকৃতিক দুর্যোগ: ইতিহাসবিদ, গবেষকদের মতে বন্যা বা ভূমিকম্প এই সভ্যতার পতন ঘটিয়েছিল। কারও মতে বন্যার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সিন্ধুবাসীরা এই অঞ্চল ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়, আবার কারও মতে সিন্ধু উপত্যকায় অবস্থিত ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে সংঘটিত ভূমিকম্পই সিন্ধু বা হরপ্পা সভ্যতাকে ধ্বংস করে।
(2) বহিরাক্রমণ: বিদেশি শত্রুর আক্রমণেই এই সভ্যতা ধ্বংস হয়েছিল বলে অনেকের অনুমান। এই বিদেশি শত্রু বলতে আর্যদেরই বোঝানো হয়েছে।
(3) অন্যান্য কারণ: সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংসের অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জলবায়ুর পরিবর্তন, সিন্ধুনদের গতিপথের পরিবর্তন, সিন্ধুবাসীদের রক্ষণশীলতা ইত্যাদি।
Enter Your Comment