West Bengal Boards Class 8 History Question & Answers Series Part - 2
অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস – আঞ্চলিক শক্তির উত্থান / Class 8 History Question & Answers
অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর(Class 8 History Questions and Answers in Bengali) সিরিজের মধ্যে আজকে তোমাদের জন্য থাকছে দ্বিতীয় অধ্যায় আঞ্চলিক শক্তির উত্থান প্রশ্ন ও উত্তর (Class Eight Ancholik Shoktir Uthhan Proshno o Uttor)। ভালো করে প্রশ্ন ও উত্তরগুলো বাড়িতে বসে প্রাকটিস করো এবং আমাদের কমেন্ট করে জানাতো পারো তোমার এই পোস্টটি কেমন লাগলো এবং এর সাথে তোমার যদি কোনো সমস্যা থাকে তাহলে সেটিও আমাদের জানাতে পারো ।
Class Eight Otit o Oitijjo wbbse - Ancholik Shoktir Uthhan MCQ Questions । প্রশ্নের মান - 1
1. ঠিক উত্তরটি বেছে নাও :
(i) ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে ___________ --কে বাংলার নাজিম পদ দেওয়া হয়।
(a) মুর্শিদকুলি খান,
(b) সাদাৎ খান,
(c) আলিবর্দি খান।
উত্তর : - (a) মুর্শিদকুলি খান,
(ii) ১৭২২ খ্রিস্টাব্দে ________এর নেতৃত্বে অযোধ্যা একটি স্বশাসিত আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে গড়ে ওঠে।
(a) নিজাম-উল-মুলক,
(b) সাদাৎ খান,
(c) সফদর জং।
উত্তর : - (b) সাদাৎ খান,
(iii) ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে মুর্শিদকুলি খান ছিলেন বাংলার -
(a) দেওয়ান
(b) ফৌজদার
(c) নবাব
উত্তর : - (a) দেওয়ান
(iv) আহমদ শাহ আবদালি ছিলেন –
(a) মারাঠা
(b) আফগান
(c) পারসিক
উত্তর: - (b) আফগান
(v) আলিনগরের সন্ধি হয়েছিল –
(a) মিরজাফর ও ব্রিটিশ কোম্পানির মধ্যে
(b) সিরাজ ও ব্রিটিশ কোম্পানির মধ্যে
(c) মিরকাশিম ও ব্রিটিশ কোম্পানির মধ্যে)।
উত্তর: - (b) সিরাজ ও ব্রিটিশ কোম্পানির মধ্যে।
(vi) ব্রিটিশ কোম্পানিকে বাংলা-বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানির অধিকার দেন -
(a) সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম
(b) সম্রাট ফাররুখশিয়র
(c) সম্রাট ঔরঙ্গজেব
উত্তর: - (a) সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম।
(vii) স্বেচ্ছায় অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি মেনে নিয়েছিলেন –
(a) টিপু সুলতান
(b) সাদাৎ খান
(c) নিজাম
উত্তর: - (c) নিজাম।
(viii) ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উত্থান হয় –
(a) পলাশির যুদ্ধের মাধ্যমে
(b) বক্সারের যুদ্ধের মাধ্যমে
(c) ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধের মাধ্যমে
উত্তর: (a) পলাশির যুদ্ধের মাধ্যমে।
(ix) পারসিক ও আফগান আক্রমণে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল—
(a) কলকাতা শহর
(b) বোম্বাই শহর
(c) দিল্লি শহর
উত্তর: (c) দিল্লি শহর।
(x) দিল্লির সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম কোম্পানিকে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার দেওয়ানি দেন -
(a) ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে
(b) ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে
(c) ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: (a) ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে।
(xi) ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দ থেকেই নিজামের শাসনে স্বাধীন _____ রাজ্য আত্মপ্রকাশ করে।
(a) বাংলা
(b) বিহার
(c) হায়দরাবাদ
উত্তর: - (c) হায়দরাবাদ।
(xii) সাদাৎ খানের নেতৃত্বে একটি স্বশাসিত আঞ্চলিক শক্তি হল -
(a) দিল্লি)
(b) অযোধ্যা
(c) উড়িষ্যা
উত্তর: - (b) অযোধ্যা।
(xiii) বাংলায় বর্গিহানা হয়েছিল -
(a) মুর্শিদকুলির সময়
(b) আলিবর্দির সময়
(c) সিরাজ উদ-দৌলার সময়
উত্তর: (b) আলিবর্দির সময়।
(xiv) টিপু সুলতানের মৃত্যু হয় - কত খ্রিস্টাব্দে ?
(a) ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে
(b) ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে
(c) ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: (a) ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে
ক্লাস 8 ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর । প্রশ্নের মান - 1
2. শূন্যস্থান পূরণ করো :
(i) হায়দরাবাদ রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন ________।
উত্তর : - মীর কামার উদ্দিন খান সিদ্দিকী।
(ii) মুর্শিদকুলি বাংলার নাজিম পদ লাভ করেন ________ খ্রিস্টাব্দে।
উত্তর : - ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে।
(iii) বাংলায় ভয়ানক দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল ______________খ্রিস্টাব্দে।
উত্তর : - ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে।
(iv) অধীনতামূলক মিত্রতার নীতি প্রবর্তন করেন _________।
উত্তর : - লর্ড ওয়েলেসলি।
(v) ঔরঙ্গজেবের মৃত্যু হয় ________________ খ্রিস্টাব্দে।
উত্তর : - ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে।
Class 8 History Chapter 2 Anusiloni Questions Answers in Bengali। প্রশ্নের মান - 1
3. স্তম্ভ দুটি মিলিয়ে লেখো :
ক- স্তম্ভ - খ- স্তম্ভ
(i) ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ (a) দেওয়ানির অধিকার
(ii) ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দ (b) পলাশির যুদ্ধ
(iii) ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ (c) বক্সারের যুদ্ধ
(iv) বাংলার নবাব (d) সিরাজ-উদ্ দৌলা
উত্তর : -
(i) ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ (b) পলাশির যুদ্ধ
(ii) ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দ (c) বক্সারের যুদ্ধ
(iii) ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ (a) দেওয়ানির অধিকার
(iv) বাংলার নবাব (d) সিরাজ-উদ্ দৌলা
আঞ্চলিক শক্তির উত্থান (দ্বিতীয় অধ্যায়) অষ্টম শ্রেণী । প্রশ্নের মান - 1
4. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর লেখো: (চার-পাঁচটি শব্দ বা একটি বাক্যের মধ্যে)
১। দেওয়ানি লাভের মধ্যে দিয়ে কোম্পানি কী কী অধিকার আদায় করেছিল?
উত্তর : - i. ভূমি থেকে রাজস্ব সংগ্রহের অধিকার।
ii. দেওয়ানি আদালতের বিচারব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ।
iii.প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক নীতিতে প্রভাব বিস্তার।
iv. বাংলার অর্থনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থার উপর পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা।
২। কোন্ নবাব বাংলার রাজধানী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন মুঙ্গেরকে?
উত্তর : - মির কাসিম।
৩। স্বত্ববিলোপ নীতি প্রয়োগ করে কোম্পানি কোন্ রাজ্যগুলি দখল করে ?
উত্তর : - i. সাতারা ,ii. ঝাঁসি ,iii. নাগপুর , iv. সাম্বলপুর ,v. উদয়পুর , vi. বাগহাট , vii. করোলি
৪। কোম্পানি ও মহীশূরের মধ্যে কতগুলি যুদ্ধ হয়েছিল?
উত্তর : - কোম্পানি ও মহীশূরের মধ্যে মোট চারটি যুদ্ধ হয়েছিল।
৫। পলাশির যুদ্ধের পর কে বাংলার নবাব নির্বাচিত হন?
উত্তর: - মিরজাফর।
৬। কাটরা মসজিদ কোথায় ?
উত্তর: - মুরশিদাবাদে।
৭। কাটরা মসজিদ কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: - মুর্শিদকুলি খান।
৮। বাংলায় কত খ্রিস্টাব্দে বর্গিহানা হয়েছিল?
উত্তর: - ১৭৪২-১৭৫১ খ্রি. পর্যন্ত
৯। কে হায়দরাবাদ রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন ?
উত্তর: - মির কামারউদ্দিন খান সিদ্দিকি।
১০। বক্সারের যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল ?
উত্তর: - ১৭৬৪ খ্রি. 1
১১। কত খ্রিস্টাব্দে ফাররুখশিয়র ফরমান জারি করেছিলেন?
উত্তর: - ১৭১৭ খ্রি.
১২। কে আলিনগরের নামকরণ করেন ?
উত্তর: - সিরাজ উদ-দৌলা।
১৩। 'অন্ধকূপ হত্যা' কোথায় হয়েছিল ?
উত্তর: - কলকাতায়।
১৪। মিরজাফরের পর কে বাংলার নবাব হন ?
উত্তর: - মির কাশিম।
১৫। বক্সারের যুদ্ধের পর কে কোম্পানিকে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার দেওয়ানির অধিকার দিতে বাধ্য হন?
উত্তর : - মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম।
১৬। স্বত্ববিলোপ নীতির প্রবক্তা বা রূপকার কে ছিলেন?
উত্তর : - লর্ড ডালহৌসি
১৭। অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি কে প্রবর্তন করেন ?
উত্তর : - লর্ড ওয়েলেসলি
১৮। ছিয়াত্তরের মন্বন্তর কত খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল ?
উত্তর : - ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে।
১৯। কলকাতায় বর্গিহানা আটকাবার জন্য যে খাল খোঁড়া হয়েছিল তাকে কী বলা হত?
উত্তর: - মারাঠা খাল।
WBBSE Class 8 History Questions & Answers Solution । প্রশ্নের মান - 2/3
5. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর লেখো: (দু-তিনটি বাক্যের মধ্যে)
(i) সলবাই-এর সন্ধি কত খ্রিস্টাব্দে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল? এই সন্ধির একটি ফলাফল লেখো।
উত্তর : - সলবাই-এর সন্ধি ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই সন্ধি হয়েছিল মারাঠা এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে।
ফলাফল:
সলবাই-এর সন্ধির ফলে মারাঠারা পেশোয়া মাধবরাও দ্বিতীয়ের নেতৃত্বে পুনরায় ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয় এবং ব্রিটিশরা বোম্বাই অঞ্চলে তাদের অবস্থান আরও দৃঢ় করে।
(ii) বেসিন-এর সন্ধি কত খ্রিস্টাব্দে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল? এই সন্ধির একটি ফলাফল লেখো।
উত্তর : - বেসিন-এর সন্ধি ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই সন্ধি হয়েছিল মারাঠা পেশোয়া বাজিরাও দ্বিতীয় এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে।
ফলাফল:
বেসিন-এর সন্ধির ফলে পেশোয়া বাজিরাও দ্বিতীয় ব্রিটিশদের সামরিক সহায়তা পেয়ে পুনরায় পেশোয়ার পদে অধিষ্ঠিত হন। এই সন্ধি মারাঠা শক্তির পতনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ছিল এবং ব্রিটিশদের ভারতে তাদের আধিপত্য বাড়াতে সাহায্য করেছিল।
(iii) লাহোর-এর সন্ধি কত খ্রিস্টাব্দে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল? এই সন্ধির একটি ফলাফল লেখো।
উত্তর : - লাহোর-এর সন্ধি ১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই সন্ধি হয়েছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং শিখ সাম্রাজ্যের মধ্যে।
ফলাফল:
লাহোর-এর সন্ধির ফলে শিখ সাম্রাজ্যের একটি বড় অংশ ব্রিটিশদের অধীনে চলে যায়, এবং ব্রিটিশরা জম্মু ও কাশ্মীর হস্তান্তর করে গুলাব সিংয়ের কাছে ৭৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। এই সন্ধি শিখ সাম্রাজ্যের পতনের সূচনা করে।
(iv) ফাররুখশিয়রের ফরমানের গুরুত্ব কী ছিল?
উত্তর। ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে দিল্লির মুঘল সম্রাট ফাররুখশিয়র ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অনুকূলে এক ফরমান (আদেশ) জারি করেন যা "ফাররুখশিয়রের ফরমান' নামে পরিচিত। এই ফরমান ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ফরমান মোতাবেক কোম্পানি বাংলাদেশে যে সমস্ত বিশেষ বাণিজ্যিক অধিকার ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেয়েছিল তাতে বাংলায় তাদের অবাধ বাণিজ্যের পথ খুলে যায়। ফলে বাংলার নবাবের সঙ্গে কোম্পানির অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংঘাতের পটভূমি তৈরি হয়।
(v) কে, কীভাবে এবং কবে হায়দরাবাদে আঞ্চলিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?
উত্তর। মুঘল দরবারের শক্তিশালী অভিজাত মির কামারউদ্দিন খান সিদ্দিকি হায়দরাবাদে আঞ্চলিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
হায়দরাবাদের মুঘল প্রাদেশিক শাসক ছিলেন মুবারিজ খান। ১৭২৩ খ্রিস্টাব্দে কামারউদ্দিন খান সিদ্দিকি মুবারিজ খানকে হারিয়ে নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন।
(vi) 'পলাশির লুণ্ঠন' কাকে বলে ?
উত্তর। পলাশির যুদ্ধে জয়লাভের পর রবার্ট ক্লাইভ মিরজাফরকে বাংলার সিংহাসনে বসিয়ে তাকে সাহায্যের পরিবর্তে বাংলার প্রচুর সম্পদ ও নবাবের সমস্ত ক্ষমতা হস্তগত করতে থাকেন। মিরজাফরকে প্রচুর অর্থ ও উপঢৌকন দিতে বাধ্য করেন। কোম্পানির কর্মচারীরাও মিরজাফরের কাছ থেকে, বাংলার জমিদার ও অবস্থাপন্ন লোকদের থেকে প্রচুর টাকা আদায় করতে থাকেন। ফলস্বরূপ বাংলার রাজকোশ শূন্য হয়ে যায়। পলাশির যুদ্ধের পর বাংলা থেকে এই লজ্জাজনক শোষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনাকেই বলা হয় 'পলাশির লুণ্ঠন'।
(vii) দ্বৈতশাসন ব্যবস্থা বলতে কী বোঝো ?
উত্তর। দিল্লির বাদশাহ শাহ আলমের ফরমান অনুযায়ী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার দেওয়ানির অধিকার পায়। ফলে বাংলায় এক নতুন ধরনের রাজনৈতিক শাসনতন্ত্র কায়েম হয়। অর্থনৈতিক ক্ষমতাহীন রাজনৈতিক দায়িত্ব, যাবতীয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব থাকে নবাব নজম-উদ্-দৌলার ওপর। অন্যদিকে দায়িত্বহীন অর্থনৈতিক কর্তৃত্ব ও রাজস্ব আদায়ের অধিকার থাকে ব্রিটিশ কোম্পানির হাতে। বাংলার শাসনব্যবস্থায় এই দুইজন শাসকের শাসনব্যবস্থাকে বলা হয় 'দ্বৈতশাসন ব্যবস্থ্যা' ।
(viii) ব্রিটিশ রেসিডেন্টদের কাজ কী ছিল ?
উত্তর: - ব্রিটিশ কোম্পানি ভারতে বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন রাজদরবারে তাদের যে প্রতিনিধি রাখতেন তারাই‘রেসিডেন্ট নামে পরিচিত ছিল। সেই সমস্ত রেসিডেন্টদের কাজ ছিল—
প্রথমত, কোম্পানির পরোক্ষ শাসন ব্যবস্থায় সাহায্য করা।
দ্বিতীয়ত, কোম্পানির ব্যবসায়িক স্বার্থরক্ষার কাজে সাহায্য করা।
তৃতীয়ত, কোম্পানির নজর এড়িয়ে ভারতীয় রাজশক্তিগুলি কোম্পানি -বিরোধী কোনো কাজ করছে কিনা সেই বিষয়ে নজরদারি করা।
চতুর্থত, ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ কোম্পানির চূড়ান্ত ক্ষমতার রূপ দেওয়ার কাজে সাহায্য করা।
(ix) স্বত্ববিলোপ নীতি কী?
উত্তর: - ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তারের একটা অভিনব নজির হল স্বত্ববিলোপ নীতি। এই নীতির প্রয়োগ করেন ১৮৪৮ সালে লর্ড ডালহৌসি। এই নীতিতে ডালহৌসি বলেন যে, কোনো দেশীয় রাজা যদি অপুত্রক অবস্থায় মারা যান, তবে তার মৃত্যুর পর সেই রাজ্যটি কোম্পানির হস্তান্তরিত হবে। এই নীতি প্রয়োগ করে তিনি একে একে সাতারা, সম্বলপুর, বলি, নামপুর প্রভৃতি রাজ্য কোম্পানির দখলে নিয়ে আসেন। অযোধ্যার নবাব এই নীতি মানতে অস্বীকার করলে অপশাসনের অজুহাতে তিনি এই রাজ্যটিও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন।
(x) পলাশির যুদ্ধের সঙ্গে বক্সারের যুদ্ধের মৌলিক পার্থক্য কী ছিল ?
উত্তর। পলাশির যুদ্ধের সঙ্গে রক্সারের যুদ্ধের মৌলিক পার্থক্য ছিল—
প্রথমত, বক্সারের যুদ্ধ পলাশির যুদ্ধের মতো একটি প্রহসন মাত্র ছিল না। এই যুদ্ধে ইংরেজরা ভারতীয় যৌথ বাহিনীকে পরাজিত করে।
দ্বিতীয়ত, পলাশির যুদ্ধে শুধুমাত্র বাংলার নবাবের পরাজয় ঘটে, কিন্তু বক্সারের যুদ্ধে বাংলা, অযোধ্যা ও মুঘল সম্রাটের যৌথ বাহিনীর পরাজয় হয়েছিল। সুতরাং, বাংলা থেকে দিল্লি পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চল ইংরেজ কোম্পানি দখল করেছিল। তৃতীয়ত, বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভে ইংরেজদের সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়েছিল।
(xi) ‘ফাররুখশিয়রের ফরমান' বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর। ফরমান -এর অর্থ হল 'আদেশ'। ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে দিল্লির সম্রাট ফাররুখশিয়র একটি আদেশ বা ফরমান জারি করেছিলেন—যা ইতিহাসে 'ফাররুখশিয়রের ফরমান' নামে পরিচিত।
সেই ফরমান মোতাবেক ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বাংলাদেশে কতকগুলি বিশেষ বাণিজ্যিক অধিকার দেওয়া হয়েছিল, যেমন—ব্রিটিশ কোম্পানি বছরে মাত্র ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে বাংলায় বাণিজ্য করতে পারবে। কিন্তু তার জন্য কোম্পানিকে কোনো শুল্ক দিতে হবে না। ব্রিটিশ কোম্পানি কলকাতার কাছাকাছি অঞ্চলে ৩৮টি গ্রামের জমিদারি কিনতে পারবে। কোম্পানির জাহাজের সঙ্গে অনুমতিপত্র থাকলেই জাহাজ অবাধে বাণিজ্য করতে পারবে। তা ছাড়া বাংলার নবাবের মুরশিদাবাদ টাকশাল প্রয়োজনমতো কোম্পানি ব্যবহার করতে পারবে।
(xii) দস্তক কি ?
উত্তর : - দস্তক ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ব্যবসায়ীদের দেওয়া একটি করমুক্ত বাণিজ্য পারমিট বা অনুমতিপত্র। এটি প্রথমে নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ দ্বারা চালু হলেও পরে ব্রিটিশরা এই সুবিধা নিজেদের জন্য ব্যবহার করতে শুরু করে।
বিশেষত্ব:
১. দস্তক পত্রধারীরা পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে কোনও শুল্ক বা কর দিতে হতো না।
২. ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সম্রাট ফররুখসিয়ার ব্রিটিশ কোম্পানিকে এই সুবিধা প্রদান করেন।
৩. ব্রিটিশ ব্যবসায়ীরা দস্তকের অপব্যবহার করে, যার ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয় এবং বাংলার অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ে।
ক্লাস 8 ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় অনুশীলনী সমাধান প্রশ্নমান-5
6. নীচের প্রশ্নের উত্তর লেখো: (আট-দশটি বাক্যের মধ্যে )
১) মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের কারণগুলি সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর । মুঘল সাম্রাজ্যের মতো একটা বৃহৎ শাসনব্যবস্থা ও শক্তি কী কারণে হঠাৎ পতনের মুখে পড়ল তা নিয়ে ইতিহাসে বেশ বিতর্ক আছে। যাই হোক, আমরা জানি যে যার সৃষ্টি আছে তার ধ্বংসও আছে। তাই মুঘলদের পতনের পিছনেও বেশ কিছু কারণ ছিল। এগুলি হল-
১। দুর্বল উত্তরাধিকারী : ঔরঙ্গজেবের পরবর্তীকালে তেমন সুদক্ষ ও বিচক্ষণ মুঘল সম্রাট আবির্ভূত হতে পারেনি। ফলে এই দুর্বল উত্তরাধিকার সিংহাসনের স্থায়িত্বকে ধীরে ধীরে কমিয়ে দিতে থাকে।
২। আঞ্চলিক বিদ্রোহ : ঔরঙ্গজেবের পরবর্তী মুঘল সম্রাটদের দুর্বল শাসন ব্যবস্থার জন্য বিভিন্ন আঞ্চলিক শক্তির উত্থান ঘটে এবং তাদের বিদ্রোহগুলি মুঘলদের কেন্দ্রীয় শাসনের ভিত দুর্বল করে দেয়। যা সামাল দেওয়া পরবর্তী সম্রাটদের পক্ষে সম্ভবপর হয়নি।
৩। দাক্ষিণাত্য অভিযান : ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য অভিযান ছিল সে সময়ে সর্বাপেক্ষা ভ্রান্ত নীতি । কেন না ঔরঙ্গজেব সাম্রাজ্যের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলকে সুরক্ষার বন্ধনে আবদ্ধ না করে দাক্ষিণাত্য অভিযানে নির্গত হলে ওই পথ দিয়ে বিদেশি শক্তি (আফগান, হুন) দিল্লিতে আক্রমণের সুবিধা পেয়ে যায়।
৪। দুর্বল সামরিক ব্যবস্থা : অষ্টাদশ শতাব্দীর পরবর্তীকালে মুঘল সম্রাটরা আর কোনোরূপ সামরিক সংস্কার ঘটাননি। ফলে মুঘলদের দুর্বল সেনাবাহিনীর পূর্ণ সুযোগ নিয়ে শিবাজি ও মারাঠাশক্তি, পারসিক নেতা নাদির শাহ, আফগান নেতা আহমদ শাহ আবদালি দিল্লি আক্রমণ করে।
৫। জায়গিরদারি ও মনসবদারি ব্যবস্থার অবনতি : জায়গির ও মনসবদারি সমস্যা মুঘলদের শাসনকাঠামোকে দুর্বল করে দেয়। ভালো জায়গির পাওয়ার জন্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, জায়গির কারচুপি মুঘল সামরিক বাহিনীকে একেবারে দুর্বল করে দেয়।
৬। কৃষক বিদ্রোহ : জায়গির ও মনসবদারি ব্যবস্থায় অসৎ ব্যক্তির অনুপ্রবেশ ঘটলে তারা নিজেদের স্বার্থে কৃষকদের থেকে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করতে থাকে ফলে কৃষকরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে, যা মুঘল সাম্রাজ্যকে শেষ পর্যন্ত তলানিতে নিয়ে যায়।
Enter Your Comment